তারেক রহমান দেশে ফেরার ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকারের চমকপ্রদ বক্তব্য! কী বললেন শফিকুল আলম?


রাজনৈতিক অঙ্গনে বহু আলোচিত এক বিষয় হলো বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত। যদিও তার দেশে ফেরার সম্ভাবনা সম্পর্কে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে, তবে এই বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে নতুন তথ্য এসেছে, যা দেশের রাজনীতি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শফিকুল আলমের বক্তব্য

নির্বাচনের পরবর্তী সময়কালে, বিশেষ করে বর্তমান সরকারের অধীনে তারেক রহমানের দেশে ফেরার ব্যাপারে নানা শঙ্কা ও সংশয় দেখা দিয়েছে। যদিও বিএনপি নেতারা একে সরকারের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক অঙ্গনে চাপ হিসেবে দেখছেন, তবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শফিকুল আলম তার ফেসবুক পেজে এই বিষয়ে এক টুইস্টিং তথ্য দিয়েছেন।

২৯ নভেম্বর ২০২৫, শনিবার শফিকুল আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট করে জানিয়েছেন, "তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো বিধিনিষেধ বা আপত্তি নেই"। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য, কারণ এর মাধ্যমে সরকার তারেক রহমানের দেশে ফেরার পথ খুলে দিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তারেক রহমানের ফেসবুক স্ট্যাটাসের পরপরই, শফিকুল আলম এই পোস্টে উল্লেখ করেন যে, “সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের বাধা নেই”, যা দেশের রাজনৈতিক মহলে একটি তাৎক্ষণিক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

এছাড়া, তিনি আরও যোগ করেছেন, "খালেদা জিয়াকে নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে যে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে, সেটি গভীর মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে করা হয়েছে"। শফিকুল আলম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে দেশের জনগণের কাছে দোয়া কামনা করেছেন, যা এক ধরনের মানবিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা যাচ্ছে।

তারেক রহমানের ফেসবুক পোস্ট এবং দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত

তারেক রহমান নিজেই ২৮ নভেম্বর, শুক্রবার রাতে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট করে জানিয়েছেন, "মায়ের অসুস্থতা এবং তার কাছে থাকার আকাঙ্ক্ষা যেকোনো সন্তানের মতো তারও রয়েছে, তবে এই সিদ্ধান্ত একক নিয়ন্ত্রণে নয়।" তিনি আরও বলেন, "রাজনৈতিক বাস্তবতার কারণে তার দেশে ফেরার সিদ্ধান্তের সুযোগ তার একক নয়"

তারেক রহমানের এই পোস্টে স্পষ্টভাবে বোঝানো হয়েছে যে, তার দেশে ফেরার বিষয়টি শুধু তার হাতে নেই, বরং রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং অন্যান্য বাহ্যিক প্রভাব তার সিদ্ধান্তে বড় ভূমিকা পালন করছে। তিনি বলেন, "স্পর্শকাতর এই বিষয়টি বিস্তারিত বর্ণনার অবকাশও সীমিত", অর্থাৎ তিনি বুঝাতে চেয়েছেন যে, এ বিষয়ে আরো কিছু বলা সম্ভব নয় এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী সময় হলে তিনি দেশে ফিরবেন।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং আন্তর্জাতিক প্রভাব

তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়টি শুধু তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নয়, এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের উপরেও নির্ভরশীল। বিএনপি নেতারা দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছেন যে, তারেক রহমানকে দেশে ফিরতে দেওয়া হচ্ছে না, এবং এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ সরকার ও কিছু আন্তর্জাতিক শক্তি তাদের পথ আগলে দাঁড়িয়ে রয়েছে।

বিশেষ করে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক এবং কিছু পশ্চিমা দেশের নীতির কারণে তার দেশে ফিরে আসা আর সহজ হয়ে উঠছে না। গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক রিপোর্টে তারেক রহমানের দেশে ফেরার ব্যাপারে কিছু প্রতিবন্ধকতা থাকার কথা উঠে এসেছে। তবে শফিকুল আলমের বক্তব্যে কোনোরূপ আন্তর্জাতিক বাধার বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়নি, যা কিছুটা আশ্বাসজনক মনে হচ্ছে।

তারেক রহমানের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

তারেক রহমানের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আরও একটি চমকপ্রদ দিক হলো তার দল বিএনপির পরিকল্পনা। বিএনপির বিভিন্ন শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, “যদি তফসিল ঘোষণা হয়, তবে পরিস্থিতি যাই হোক, তারেক রহমান দেশে ফিরে আসবেন এবং নির্বাচনে নেতৃত্ব দেবেন”। বিএনপির এই বক্তব্য থেকে পরিষ্কার হয়ে যায় যে, তারেক রহমানের দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত এখন পুরোপুরি রাজনৈতিক এবং দলের কৌশলের সঙ্গে সম্পর্কিত।

এই অবস্থায়, তারেক রহমানের দেশে ফেরার ব্যাপারে যে প্রশ্ন উঠছে তা এখন রাজনৈতিক সীমানা ছাড়িয়ে গিয়েছে, এবং বিষয়টি শুধু তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে সীমাবদ্ধ নয়, বরং দেশের বৃহত্তর রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে।

সংক্ষেপে: সরকারের ভূমিকা এবং ভবিষ্যত আশঙ্কা

শফিকুল আলমের বক্তব্য একদিকে সরকারের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করেছে যে তারেক রহমানের দেশে ফেরার পথে কোনো আইনি বাধা নেই, অন্যদিকে তারেক রহমানের নিজের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে যে, দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা ও আন্তর্জাতিক চাপের কারণে তার ফেরার সিদ্ধান্ত এককভাবে গ্রহণ সম্ভব নয়।

এভাবে, তারেক রহমানের দেশে ফেরার এই অচলাবস্থা বাংলাদেশের রাজনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় ঘুরে দাঁড়ানোর মুহূর্ত হতে পারে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, তারেক রহমানের দেশে ফিরে আসা শুধু রাজনৈতিক নয়, একটি বহুমাত্রিক কৌশলের অংশ হতে পারে, যেখানে দেশের ভিতর এবং বাইরে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে।

এটি এখনো পরিষ্কার নয়, তবে বর্তমান পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মধ্যে যে রাজনৈতিক সংঘর্ষ সৃষ্টি হবে, তারও একটি বড় ভূমিকা থাকবে তারেক রহমানের দেশে ফেরার সিদ্ধান্তের মধ্যে।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

গিনি-বিসাউয়ে সামরিক হস্তক্ষেপ: প্রেসিডেন্ট ও নেতাদের আটক, নির্বাচনী পরিস্থিতি স্থগিত

এমটি কায়রোসে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা: কেমন আছেন বাংলাদেশি নাবিকরা?

তারেক রহমান দেশে ফিরতে পারছেন না কেন? দেশের বাইরে থাকা নেতার আসল সত্য!